Breaking News
Home / দরকারী

দরকারী

Memorandum of Association  বা স্মারক সংঘ বা স্মারকলিপি সম্পর্কে জানুন

Memorandum of Association  বা স্মারক সংঘ বা স্মারকলিপি হলো কোম্পানীর মূল দলিল। এর উপর ভিত্তি করেই দাড়িয়ে থাকে কোম্পানীর মূল বিষয়াবলী। এটিকে কোম্পানীর সংবিধান বলা হয়। এই সংবিধানের মাধ্যমেই কোম্পানীর কার্মক্ষেত্র এবং ক্ষমতার সীমা নির্ধারণ করা হয়। ফলে Memorandum of Association  বা স্মারক লিপির ক্ষমতা দ্বারা সীমায়িত ক্ষমতার বাইরে কোন কোম্পানী কাজ করতে পারে না।

কোম্পানী আইনের ২ (১) (ফ) স্মারকলিপি সম্পর্কে বলা হয়েছে, Memorandum means memorandum of Association of a company as originally framed or as altered from time to time in pursuance of any previous companies law or of this act. অর্থাৎ স্মারক লিপি বলতে সেই স্মারকলিপিকেই বুঝাবে যা প্রথমে প্রণীত হয়েছিল এবং কোন পরিবর্তন হলে কোম্পানী আইনের বিধান অনুসারে পরিবর্তিত হয়।

প্রকৃত পক্ষে “Memorandum of Association  বা স্মারক লিপি হলো কোম্পানীর সনদ যা আইনের বলে গঠিত কোন কোম্পানীর ক্ষমতার সীমা নির্দেশ করে। ”

স্মারক লিপির মূল উদ্দেশ্য দ্বিমুখী, যেমন প্রথমত শেয়ারহোল্ডারগণের দৃষ্টিকোণ থেকে আর দ্বিতীয়ত হলো তৃতীয় পক্ষের দৃষ্টিকোন থেকে। শেয়ারহোল্ডারের দৃষ্টিকোন থেকে অর্থ হলো , শেয়ার কেনার জন্য যে অর্থ বিনিয়োগ করবেন, সে অর্থ কোথায়, কিভাবে এবং কি পরিমান ঝুকিতে বিনিয়োগ হচ্ছে বা হবে তা কোম্পানীর Memorandum of Association  বা স্মারক লিপি দেখে বুঝা যাবে। তৃতীয় পক্ষের দৃষ্টিকোন থেকে অর্থ হলো , যারা কোন কোম্পানীর সাথে চুক্তি করতে চায়, তারা Memorandum of Association  বা স্মারক লিপি দেখে বুঝতে পারবে কোম্পানীর চুক্তি করার বৈধতা আছে কিনা।

Memorandum of Association  বা স্মারক লিপি মুদ্রিত এবং স্বাক্ষরিত হতে হবে। প্রাইভেট কোম্পানী এবং পাবলিক কোম্পানীর ক্ষেত্রে যথাক্রমে ২ (দুই) জন এবং ০৭ (সাত) জন সদস্য কর্তৃক স্মারকলিপি স্বাক্ষরিত হতে হবে।

শেয়ারদ্বারা সীমিত দায়সম্পন্ন কোম্পানীর স্মারকলিপির বিষয়বস্তুতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো থাকতে হয়

১. কোম্পানীর নাম

২. কোম্পানীর অবস্থান ও ঠিকানা

৩. কোম্পানী গঠনের উদ্দেশ্য

৪. মূলধন

৫. কোম্পানীর দায়

৬. সম্মতি

যখন কোন ব্যবসা লিমিটেড কোম্পানীতে পরিণত হয়, তখন ঐ কোম্পানীর নামের শেষে ‘লিমিটেড’ শব্দ লিখতে হয়। সকল ব্যবসায়িক কাজে লিমিটেড শব্দ লিখে ব্যবসা করতে হবে।

যদি কোম্পানী কোন চুক্তি করার সময়  ‘লিমিটেড’ শব্দটিকে বাদ দেয় তবে কোম্পানীর কর্মকর্তাগণ এরুপ চুক্তির ফলে ক্ষয়ক্ষতির দায় ভোগ করবেন। তবে, Limited বা লিমিটেড শব্দটি পূর্ণ ব্যবহার না করে সংক্ষিপ্তভাবে লিঃ বা ltd লেখা যায়।

স্মারক লিপির পরেই পরিমেল নিয়মাবলী বা সংঘবিধি হলো কোম্পানীর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দলিল। কোম্পানীর অভ্যন্তরীণ পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত যাবতীয় নিয়মাবলী পরিমেল নিয়ামাবলীতে লিপিবদ্ধ করা হয়। প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে নিয়োজিত বিভিন্ন ব্যক্তির ক্ষমতা, কর্তৃত্ব ও সম্পর্কের দিক নির্দেশনার জন্য  পরিমেল নিয়মাবলীর উপর নির্ভর করতে হয়। পরিমেল নিয়মাবলী স্মারক সংঘের অধীনে কাজ করে থাকে।

কোম্পানীর মূলধন পরিবর্তন, সাধারন সভা আহবান, লভ্যাংশ বন্টন, অবসায়ন ইত্যাদি কোম্পানীর অভ্যন্তরীণ বিষয়াদি  পরিমেল নিয়মাবলীতে স্থান পায়।

পরিমেল নিয়মাবলী হলো কোম্পানীর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দলিল যার মধ্যে কোম্পানীর অভ্যন্তরীণ পরিচালনার জন্য সকল প্রকারের প্রয়োজনীয় নিয়মকানুন লিপিবদ্ধ করা থাকে। কোন কোম্পানীর পরিমেল নিয়মাবলীতে যে সকল বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে তা নিচে দেওয়া হলোঃ

ক. দৈনন্দিন কাজ পরিচালনা

খ. পরিচালক সংক্রান্ত নিয়মাবলী

গ. অন্যান্য কর্মকর্তা বা প্রতিষ্ঠান নিয়োগ সংক্রান্ত নিয়মাবলী

ঘ. শেয়ারহোল্ডার সংক্রান্ত নিয়মাবলী

ঙ. শেয়ার সংক্রান্ত নিয়মাবলী

চ. মূলধন সংক্রান্ত বিষয়াদি

ছ. লভ্যাংশ সংক্রান্ত নিয়মাবলী

জ. হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষণ পদ্ধতি

ঝ. সভা সংক্রান্ত নিয়মাবলী

ঞ. কোম্পানীর ঋণ গ্রহনের ক্ষমতা ও পদ্ধতি

ত. সংরক্ষিত তহবিল গঠন ও ব্যয়ের পদ্ধতি

থ. কোম্পানীর  বিলোপ সাধন সংক্রান্ত নিয়মাবলী।

শেয়ার দ্বারা সীমাবদ্ধ দায়সম্পন্ন কোম্পানী , কোম্পানী আইনে বর্ণিত পরিমেল নিয়মাবলীর নমুনা Table A গ্রহন করতে পারে। কিন্তু সীমাহীন দায়সম্পন্ন কোম্পানী , প্রতিশ্রুতি দ্বারা দায় সীমাবদ্ধ কোম্পানী ও প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানীর ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র পরিমেল নিয়মাবলী তৈরী এবং ঐ পরিমেল নিয়মাবলী, কোম্পানী নিবন্ধকের নিকট দাখিল বাধ্যতামূলক।

ব্যাংক একাউন্টের নমিনীর আদ্যোপান্ত জানুন

ব্যাংক কোম্পানী ।আইন ১৯৯১ এর ১০৩ ধারার ০১ উপধারায় কোন আমানত ব্যাংকে রাখলে আমানতী অর্থ পরিশোধের জন্য মনোনায়ন দানের কথা বলা হয়েছে।  উক্ত আইনে বলা হয়েছেঃ ব্যাংক কোম্পানীর নিকট রক্ষিত কোন আমানত যদি একক ব্যক্তি বা যৌথভাবে একাধিক ব্যক্তির নামে জমা থাকে, তাহা হইলে উক্ত একক আমানতকারী এককভাবে বা, ক্ষেত্রমত, যৌথ আমানতকারীগণ যৌথভাবে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, এমন একজন বা একাধিক ব্যক্তিকে মনোনীত করিতে পারিবেন যাহাকে বা যাহাদিগেকে একক আমানতকারী বা যৌথ আমানতকারীগণের সকলের মৃত্যূর পর আমানতের টাকা প্রদান করা যাইতে পারেঃ

তবে শর্ত খাকে যে, উক্ত আমানতকারী বা যৌথআমানতকারীগণ যে কোন সময় উক্ত মনোনয়ন বাতিল করিয়া নির্ধারিত পদ্ধতিতে অন্য কোন ব্যক্তিকে বা ব্যক্তিবর্গকে মনোনীত করিতে পারিবেন।

মনোনীত কোন ব্যক্তি নাবালক হইলে তাহার নাবালক থাকা অবস্থায় একক আমানতকারীর বা যৌথ আমানতকারগণের মৃত্যুর ক্ষেত্রে আমানতের টাকা কে গ্রহণ করিবেন তৎসম্পর্কে উক্ত একক আমানতকারী বা যৌথ আমানতকারীগণ নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট করিতে পারিবেন।

 উক্ত আইনের উপধারা ৩ এ বলা হয়েছে, আপততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে বা কোন উইলে বা কোন সম্পত্তি বিলি বন্টনের ব্যবস্থা সম্বলিত অন্য কোন প্রকার দলিলে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তিকে মনোনীত করা হইলে বা উপধারা ২ এর অধীনে কোন কোন ব্যক্তি নির্দিষ্ট হইলে তিনি একক আমানতকারী বা ক্ষেত্রমত  যৌথ আমানতকারীগণের সকলের মৃত্যুর পর, উক্ত আমানতের ব্যাপারে একক আমানতকারীর বা ক্ষেত্রমত সকল আমানতকারীর যাবতীয় অধিকার লাভ করিবেন এবং অন্য যে কোন ব্যক্তি উক্ত অধিকার হইতে বহ্চিত হইবেন।

উক্ত ধারার ৪ উপধারায় বলা হয়েছেঃ এই ধারার বিধান অনুযায়ী কোন ব্যাংক কোম্পানী কর্তৃক টাকা  পরিশোধিত হইলে সংশ্লিষ্ট আমানত সম্পর্কিত উহার যাবতীয় দায় পরিশোধ হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

প্রশ্ন হচ্ছে, ব্যাংক হিসাব বা একাউন্ট করতে কি নমিনী করতে হবে ?

ব্যাংক কোম্পানী আইনের ১০৩ ধারা মোতাবেক ব্যাংক হিসাব বা একাউন্ট করতে হলে নমিনী করতে হবে।

আমার একাউন্টে কে কে নমিনী হতে পারবে অথবা আমি আমি কাকে নমিনী করতে পারবো ?

আপনি আপনার বাবা মা ভাই বোন, ছেলে মেয়ে আত্নীয় স্বজন সর্বোপরি বাংলাদেশের যে কোন সুস্থ্য মস্তিষ্কের ব্যক্তিকে নমিনী করতে পারবেন। তবে, আপনি মারা গেলে, যে আপনার সম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে পারবে, বা আপনি যে যে ইচ্ছা পোষন করে যাচ্ছেন, আপনার মৃত্যূর পর সে সকল ইচ্ছা যে ব্যক্তি পূরণ করতে পারবে, বা আপনি যাকে বেশি ভরসা করেনম তাকেই নমিনী করুন।

আমি কাকে নমিনী করতে পারবো ?

পূর্বেই বলা বলা হয়েছে, আপনি যে কাউকেই নমিনী করতে পারবেন। তবে, সে আপনার আত্নীয় স্বজন হতে হবে এমন নয়। আপনি বাংলাদেশের যে কোন সুস্থ্য মস্তিষ্কের ব্যক্তিকে নমিনী করতে পারবেন।

আপনি কতজনকে নমিনী করতে পারবেন ?

ব্যাংক কোম্পানী আইন ১৯৯১ , সর্বোচ্চ কতজনকে নমিনী করা যাবে, সে বিষয়ে সীমা উল্লেখ নাই। লেখা আছে, এক বা একাধিক ব্যক্তিকে নমিনী করতে পারবেন।

তবে, নমিনীর সংখ্যা কম রাখারই ভালো। যাকে নমিনী করবেন তাকে বলে দিন, আপনার মৃত্যুর পর আপনার টাকা কিভাবে ব্যবহার হবে। আপনার ইচ্ছার যে কোন ব্যত্যয় না হয়। আর আপনার ইচ্ছার পরিবর্তন করতে পারে এমন ব্যক্তিকে নমিনী না করাই ভালো।

আমি কি নাবালককে নমিনী করতে পারবো ?

আইন অনুসারে নাবালককেও নমিনী করা যায়। তবে, নাবালক সাবালক না হওয়া অবধি ঐ টাকা উঠাতে পারবে না। সেজন্য আইনে বলা আছে, নাবালককে নমিনী করা হলে আপনার মৃত্যুর পর নাবালকের হয়ে অন্য কোন ব্যক্তি আপনার টাকা উঠাতে পারবে, তা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ব্যাংককে জানাতে হবে।

একাধিক ব্যক্তিকে নমিনী করলে কে কত টাক পাবে ?

আপনি যখন একাধিক ব্যক্তিকে নমিনী করবেন, তখন কে কত টাকা বা আপনার টাকার কত অংশ কে পাবে তা নির্দিষ্ট করে দিন। আপনার নির্ধারিত অংশ মোতাবেক নমিনীগণ টাকা পাবেন।

আপনি যদি অংশ নির্ধারিত না করে দেন তাহলে কি হবে ?

নমিনী যদি একজন হয়, তবে তিনি আপনার টাকার ১০০% পাবেন। অর্থাৎ পুরো টাকাই পাবেন। আর নমিনী যদি একাধিক হয়, এবং আপনি যদি তাদের প্রাপ্য অংশ নির্ধারিত না করে দেন, তাহলে সকল নমিনী সমান অংশ পাবে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যেমন সিটি কর্পোরেশন, জেলা ,উপজেলা , ইউনিয়ন পরিষদ , পৌরসভার যে কোন আমানতের উপর ২০% হারে উৎসে কর কর্তন করার নির্দেশনা জারী

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলতে কি বুঝায়?

আয়কর আইন ২০২৩ অনুযায়ী স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কোম্পানী হিসাবে বিবেচিত হবে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলতে, সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা এবং  ইউনিয়ন পরিষদ কে বুঝাবে। এই সকল স্থানীয় কর্তৃপক্ষের যে কোন প্রকারের আমানতের উপর সুদ বা মুনাফা প্রদানের সময় প্রদত্ত সুদ বা মুনাফার উপর ২০% হারে উৎসে কর কর্তন করতে হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিগত ৩১ মার্চ ২০২৪ তারিখে ০৮.০১.০০০০.০৩০.২২.০০৫.২০.৫৯ সংখ্যক পত্র দ্বারা এ বিষয়ে স্পষ্টীকরণ সার্কুলার জারী করেছে।

কত শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তন করতে হবে?

আ্য়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ১০২(১) অনুযায়ী আয়কর আইন ,২০২৩ বা বাংলাদেশে বলবৎ অন্য কোন আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, বাংলাদেশে বসবাসকারী ( নিবাসী) ব্যক্তিকে কোন ব্যাংক, কোন কো অপারেটিভ ব্যাংক, ইসলামী নীতিমালা মোতাবেক পরিচালিত কোন ব্যাংক, নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বা কোন লিজিং কোম্পানী বা কোন হাউজিং ফাইন্যান্স কোম্পানী , কোন সঞ্চয়ী আমানত, স্থায়ী আমানত বা মেয়াদী আমানত বা অন্য কোন রকম বা প্রকার আমানতের বিপরীতে কোন বা মুনাফা প্রদান করলে, সুদ বা মুনাফা প্রদানের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি , সুদ বা মুনাফা , কোন ব্যক্তির হিসাবে ক্রেডিটের সময় অথবা সুদ বা মুনাফা পরিশোধের সময় , যেটি পূর্বে ঘটে , উৎসে কর কর্তনপূর্বক সরকারী কোষাগারে জমা করবেন। উক্ত সুদ বা মুনাফা যদি কোম্পানী করদাতা কর্তৃক গৃহীত হয়, তবে ২০% হারে উৎসে কর কর্তন করতে হবে। যেহেতু, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কোম্পানীর সংজ্ঞাভুক্ত, সেহেতু স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গৃহীত সুদ বা মুনাফার ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের হার হবে ২০% । তবে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক, রিটার্ণ দাখিলের প্রমাণক উপস্থাপন করতে না পারলে তার ব্যর্থতায় ৫০% অতিরিক্ত হারে উৎসে কর কর্তন করা যাবে না।

চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট খেলাপি ঋণ এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট খেলাপি ঋণ এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। এই খেলাপী ঋণ, মোট বিতরণ করা ঋণের ১০.১১ শতাংশ। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ব্যাংক খাতে মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা।

গত মার্চ শেষে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ০১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি ৮০ লাখ টাকা, যা কিনা ঐ সময়ে মোট ঋণের ৮.৮ শতাংশ। আর তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ ২৪ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা বেড়ে গিয়ে এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকায় দাড়াল। গত বছরের জুন শেষে দেশে খেলাপি ঋণ ছিল এক লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা যা কিনা ঐ সময়ে বিতরণকৃত মোট ঋণের ৮.৯৬ শতাংশ। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩০ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা।

বাংলাদেশে বিতরণ করা ঋণের সঙ্গে খেলাপি ঋণের তুলনা করলে তা এখন মোট ঋণের ১০. ১১ শতাংশ। সুতরাং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। অন্যদিকে, অর্থনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কা রয়েছে প্রথম অবস্থানে। শ্রীলংকার খেলাপি ঋণের হার ১৩.৩৩ শতাংশ, পাকিস্তানে ৭.৪ শতাংশ, ভারতে ৩.৯ শতাংশ।

এদিকে বাংলাদেশের রিজার্ভ কমছেই। রেমিট্যান্সও কমতে শুরু করেছে। কমছে রপ্তানি আয়। বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন ২২ বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে এসেছে বলে জানা গেছে। এটা আইএমএফ-এর অনুমোদিত রিজার্ভের চেয়ে কম।

সংশ্লিষ্ট খাত বিশেষজ্ঞগণ বলেছেন,  ঋণ নিয়ে নানা সংকটের কারণে কেউ ঋণখেলাপি হতেই পারেন।  কিন্তু আমাদের দেশে সেটা খুবই কম। এখানে ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ইচ্ছে করে ফেরত দেয়া হয় না। এই কারণেই খেলাপি ঋণ হয় এখানে। তারা ক্ষমতাশালী। তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতাসহ আরো অনেক ক্ষমতা আছে। এটা একটা দুষ্টচক্র। এদের কোনো বিচার না হওয়ায় ব্যাংক থেকে ঋণের নামে টাকা নিয়ে তা ফেরত না দেয়ার একটি সংস্কুতি তৈরি হয়েছে। এটা ব্যাংকের টাকা লুটপাটের একটা কৌশল হিসেবে দাাঁড়িয়ে গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক যে হিসেব দেয় বাস্তবে তার চেয়ে খেলাপি ঋণ অনেক বেশি হতে পারে বলে অনেকের ধারণা করেন৷ ব্যাংক খাতে খেলাপি হয়ে যাওয়া আদায় অযোগ্য ঋণকে তিন বছর পর অবলোপন (রাইট) করতে পারে ব্যাংক, যা খেলাপির তালিকায় না রেখে পৃথক হিসাব রাখা হয়।

আবার ব্যাংকের পুনঃতফসিল করা ঋণের হিসাবও খেলাপি ঋণের তালিকায় থাকে না। আবার আদালতে রিট করে অনেকে খেলাপি হওয়া আটকে রেখেছেন। অনেক ঋণ নিয়ে আদালতে মামলা আছে। এর পরিমাণ দুই লাখ পাঁচ হাজার কোটি টাকা। ফলে তা বাংলাদেশ ব্যাংক দেখাতে পারে না। আর ৫৫ হাজার কোটি টাকা আছে রাইট অফ করা ঋণ। এই দুই লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা বাদ দিয়ে বাকি এক লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ক্লাসিফায়েড ঋণ হিসেবে দেখানো হয় বলে বিভিন্ন খবরে প্রকাশ হয়েছে।

সূত্রঃ বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও বাংলাদেশ ব্যাংক।

দ্রষ্টব্যঃ এখানে যে সকল লেখা আছে, তা কেবলই প্রকাশিত বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও বিভিন্ন মডিয়া থেকে নেওয়া। নিজস্ব কোন উৎসে থেকে নেওয়া নয়।

ব্যাংক হতে ঋণ নিতে লাগবে আঙ্গুলের ছাপ

এখন থেকে ব্যাংক হতে ঋণ নিতে লাগবে আঙ্গুলের ছাপ। একইসাথে ঋণ ডকুমেন্ট তৃতীয় পক্ষীয় জামিনাদাতাকে পড়ে শুনাতে হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বুধবার ০৭ অগাষ্ট ২০২৩ তারেখ বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে।

প্রকাশিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মহামান্য হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে যে, সাম্প্রতিক সময়ে আদালতে বেশ কিছু রিট পিটিশন দায়ের করা হচ্ছে।  উক্ত পিটিশনসমূহে ঋণ গ্রহীতারা এবং ঋণের জামিনদাতাগণ উভয় ব্যক্তিই যথাক্রমে ঋণ গ্রহণ এবং জামিন প্রদান সংক্রান্ত বিষয়ে দলিলাদিতে স্বাক্ষর প্রদান করেননি মর্মে উল্লেখ করেছেন। সংশ্লিষ্ট চার্জ ডকুমেন্টসমূহের সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য ঋণ গ্রহীতা এবং জামিনদাতার স্বাক্ষরের উপর নির্ভর করতে হয় । যার কারেণ ঋণ আদায়ের আইনগত প্রক্রিয়া গ্রহণ বিঘ্নিত হচ্ছে।’

প্রকাশিত নির্দেশনায় আরও উল্লেখ করা  হয়, এমন সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে উদ্ভূত আইনগত জটিলতা নিরসনকল্পে নির্দেশনা প্রদান করা যাচ্ছে যে, ঋণ প্রদানের উদ্দেশ্যে গৃহীত চার্জ ডকুমেন্টসমেূহের বিষয়বস্তু ঋণ গ্রহীতা এবং জামিনদাতাসহ সংশ্লিষ্ট তৃতীয়পক্ষীয় ব্যক্তি বা পক্ষকে পড়ে শুনানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। উক্ত ডকুমেন্টসমূহে তাদের  স্বাক্ষরের  পাশাপাশি , উভয় হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) জন্য সংরক্ষিত ডাটাবেইজ হতে যাচাইপূর্বক তা গ্রহণ করতে হবে। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক উল্লেখ করেছে । নির্দেশনাটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও বলা হয়েছে। ।

বাজেট ঘোষনায় যে সকল পণ্যের দাম কমতে পারে

যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে

জনস্বার্থ ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষার জন্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে বিভিন্ন ধরনের পণ্যে শুল্ক কর ও ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যার দরুন, বিভিন্ন ধরনের খাদ্যপণ্য, পোশাক ও ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতির দাম কমতে পারে। যেমন– মাংস, এলইডি বাল্ব ও সুইচ-সকেট, ই-কমার্সের ডেলিভারি চার্জ, মিষ্টি, কীটনাশক, স্প্রেয়ার মেশিন, হাতে তৈরি বিস্কুট ও কেক, ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মার ওষুধ, পশুখাদ্য, অপটিক্যাল ফাইবার, উড়োজাহাজ ইজারা, কনটেইনার, ব্লেন্ডার, জুসার আর  প্রেশার কুকারের মতো বিভিন্ন গৃহস্থালি সরঞ্জাম উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা আগামী দুই বছর (২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত) বহাল থাকবে। একই ধরনের সুবিধা পাবে ওয়াশিং মেশিন এবং মাইক্রোওয়েভ ও ইলেকট্রিক ওভেন উৎপাদনকারী কারখানাগুলো। তথ্যপ্রযুক্তি ও কম্পিউটার পণ্য উৎপাদনে অব্যাহতি সুবিধা আগামী তিন বছর (২০২৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত) বাড়ানো হয়েছে। রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার উৎপাদনে এখনকার ৫ শতাংশের অধিক ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধার মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপারের কাঁচামাল আমদানিতেও ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা আরও এক বছর থাকবে বলে প্রস্তাব করা হয়েছে। সাবান ও শ্যাম্পুর দুটি কাঁচামালে ৫ শতাংশের অতিরিক্ত ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা আরো এক বছর বহাল রাখা হচ্ছে।

যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে

২০২৩-২৪ অর্থ বছেরের বাজেটে বেশ কিছু পণ্যে শুল্ক আরোপ বা আগের চেয়ে বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। যার ফলে দামি গাড়ি, বাইসাইকেল, নির্মাণ সামগ্রী, জমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন, সিগারেট, বাসমতি চাল, কাজুবাদাম, সোনা, খেজুর, সিমেন্ট, রড, বিদেশি আঠা বা গ্লু, ভ্রমণ খরচ, প্লাস্টিকের গৃহস্থালি পণ্য, ফ্রিজ, ফ্যান , এক্সেলেটর, টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার, টিস্যু, ন্যাপকিন, কোমল পানীয়, ওভেন, কলম, চশমা ও এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

২০২৩- ২৪ অর্থ বছরের ঘোষিত বাজেটের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

‘উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’ এই শিরোনামে ২০২৩ – ২০২৪ অর্থবছরের জন্য  বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ডিজিটাল বাংলাদেশের উপরের ধাপ হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ।

আর স্মার্ট বাংলাদেশের প্রথম ধাপ হিসেবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী। যা কিনা মোট জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। উচ্চপ্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা নিয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রাক্কলন করা হয়েছে এইবারের বাজেটে। ঘোষিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ।

ঘোষিত এই বাজেট বাংলাদেশের ৫২তম বাজেট। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, প্রথম ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেছিলেন। বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ঘোষিত এটি পঞ্চম বাজেট এবং আওয়ামী লীগ সরকারের এটি ২৪তম বাজেট।

বিভিন্ন খবরে প্রকাশ হয়েছে,  আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। যা কিনা চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি। বাজেটের ঘোষিত ব্যয় মেটাতে মোট আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এই লক্ষ্যমাত্রা ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ৬৭ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা বেশি। ঘোষিত ২৪ তম বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা।

২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে করমুক্ত আয়ের সীমা চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

ঘোষিত ২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশের ঘরে রাখা হয়েছে। টাকার অঙ্কে ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ (অনুদানসহ) ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। ঘাটতি মেটাতে বিদেশি ঋণ বাবদ ধরা হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। সরকার অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন খাত থেকে ঋণ হিসাবে ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ ঋণের মধ্যে সরকার ব্যাংক ব্যবস্থাপনা থেকে ঋণ নিতে পারে ১ লাখ ২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা, আর সঞ্চয়পত্র বিক্রির মাধ্যমে নেবে ১৮ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে নেবে ৫ হাজার কোটি টাকা।

আয়করের ক্ষেত্রে পুরুষ করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৩ লাখ এবং নারী ও ৬৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে সর্বনিম্ন করহার ৫ শতাংশ ও সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশে নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।

মূল্যস্ফীতি ও জিডিপি

২০২৩ -২৪ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে খবরে প্রকাশ হয়েছে। তাই,  সরকার যেভাবেই হোক আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির লাগাম ৬ শতাংশের মধ্যে টেনে রাখতে চায়। নতুন অর্থবছরের জিডিপি হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭.৫ শতাংশ। মোট জিডিপির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৫০ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা।

DMCA.com Protection Status