‘উন্নয়নের অভিযাত্রার দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা’ এই শিরোনামে ২০২৩ – ২০২৪ অর্থবছরের জন্য বাজেট উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ডিজিটাল বাংলাদেশের উপরের ধাপ হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ।
আর স্মার্ট বাংলাদেশের প্রথম ধাপ হিসেবে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করছেন অর্থমন্ত্রী। যা কিনা মোট জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। উচ্চপ্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা নিয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রাক্কলন করা হয়েছে এইবারের বাজেটে। ঘোষিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ শতাংশ।
ঘোষিত এই বাজেট বাংলাদেশের ৫২তম বাজেট। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকারের অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, প্রথম ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেছিলেন। বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ঘোষিত এটি পঞ্চম বাজেট এবং আওয়ামী লীগ সরকারের এটি ২৪তম বাজেট।
বিভিন্ন খবরে প্রকাশ হয়েছে, আসন্ন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। যা কিনা চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ১ লাখ ১ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা বেশি। বাজেটের ঘোষিত ব্যয় মেটাতে মোট আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এই লক্ষ্যমাত্রা ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ৬৭ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা বেশি। ঘোষিত ২৪ তম বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা।
২০২৩ -২০২৪ অর্থবছরে করমুক্ত আয়ের সীমা চলতি অর্থবছরের তুলনায় ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
ঘোষিত ২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশের ঘরে রাখা হয়েছে। টাকার অঙ্কে ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ (অনুদানসহ) ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। ঘাটতি মেটাতে বিদেশি ঋণ বাবদ ধরা হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। সরকার অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন খাত থেকে ঋণ হিসাবে ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ ঋণের মধ্যে সরকার ব্যাংক ব্যবস্থাপনা থেকে ঋণ নিতে পারে ১ লাখ ২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা, আর সঞ্চয়পত্র বিক্রির মাধ্যমে নেবে ১৮ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে নেবে ৫ হাজার কোটি টাকা।
আয়করের ক্ষেত্রে পুরুষ করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৩ লাখ এবং নারী ও ৬৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে সর্বনিম্ন করহার ৫ শতাংশ ও সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশে নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
মূল্যস্ফীতি ও জিডিপি
২০২৩ -২৪ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে খবরে প্রকাশ হয়েছে। তাই, সরকার যেভাবেই হোক আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতির লাগাম ৬ শতাংশের মধ্যে টেনে রাখতে চায়। নতুন অর্থবছরের জিডিপি হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭.৫ শতাংশ। মোট জিডিপির পরিমাণ ধরা হয়েছে ৫০ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা।