বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট খেলাপি ঋণ এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। এই খেলাপী ঋণ, মোট বিতরণ করা ঋণের ১০.১১ শতাংশ। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ব্যাংক খাতে মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা।
গত মার্চ শেষে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ০১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি ৮০ লাখ টাকা, যা কিনা ঐ সময়ে মোট ঋণের ৮.৮ শতাংশ। আর তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ ২৪ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা বেড়ে গিয়ে এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকায় দাড়াল। গত বছরের জুন শেষে দেশে খেলাপি ঋণ ছিল এক লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি টাকা যা কিনা ঐ সময়ে বিতরণকৃত মোট ঋণের ৮.৯৬ শতাংশ। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩০ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা।
বাংলাদেশে বিতরণ করা ঋণের সঙ্গে খেলাপি ঋণের তুলনা করলে তা এখন মোট ঋণের ১০. ১১ শতাংশ। সুতরাং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ খেলাপি ঋণে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। অন্যদিকে, অর্থনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কা রয়েছে প্রথম অবস্থানে। শ্রীলংকার খেলাপি ঋণের হার ১৩.৩৩ শতাংশ, পাকিস্তানে ৭.৪ শতাংশ, ভারতে ৩.৯ শতাংশ।
এদিকে বাংলাদেশের রিজার্ভ কমছেই। রেমিট্যান্সও কমতে শুরু করেছে। কমছে রপ্তানি আয়। বাংলাদেশের রিজার্ভ এখন ২২ বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে এসেছে বলে জানা গেছে। এটা আইএমএফ-এর অনুমোদিত রিজার্ভের চেয়ে কম।
সংশ্লিষ্ট খাত বিশেষজ্ঞগণ বলেছেন, ঋণ নিয়ে নানা সংকটের কারণে কেউ ঋণখেলাপি হতেই পারেন। কিন্তু আমাদের দেশে সেটা খুবই কম। এখানে ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ইচ্ছে করে ফেরত দেয়া হয় না। এই কারণেই খেলাপি ঋণ হয় এখানে। তারা ক্ষমতাশালী। তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতাসহ আরো অনেক ক্ষমতা আছে। এটা একটা দুষ্টচক্র। এদের কোনো বিচার না হওয়ায় ব্যাংক থেকে ঋণের নামে টাকা নিয়ে তা ফেরত না দেয়ার একটি সংস্কুতি তৈরি হয়েছে। এটা ব্যাংকের টাকা লুটপাটের একটা কৌশল হিসেবে দাাঁড়িয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক যে হিসেব দেয় বাস্তবে তার চেয়ে খেলাপি ঋণ অনেক বেশি হতে পারে বলে অনেকের ধারণা করেন৷ ব্যাংক খাতে খেলাপি হয়ে যাওয়া আদায় অযোগ্য ঋণকে তিন বছর পর অবলোপন (রাইট) করতে পারে ব্যাংক, যা খেলাপির তালিকায় না রেখে পৃথক হিসাব রাখা হয়।
আবার ব্যাংকের পুনঃতফসিল করা ঋণের হিসাবও খেলাপি ঋণের তালিকায় থাকে না। আবার আদালতে রিট করে অনেকে খেলাপি হওয়া আটকে রেখেছেন। অনেক ঋণ নিয়ে আদালতে মামলা আছে। এর পরিমাণ দুই লাখ পাঁচ হাজার কোটি টাকা। ফলে তা বাংলাদেশ ব্যাংক দেখাতে পারে না। আর ৫৫ হাজার কোটি টাকা আছে রাইট অফ করা ঋণ। এই দুই লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা বাদ দিয়ে বাকি এক লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা ক্লাসিফায়েড ঋণ হিসেবে দেখানো হয় বলে বিভিন্ন খবরে প্রকাশ হয়েছে।
সূত্রঃ বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও বাংলাদেশ ব্যাংক।
দ্রষ্টব্যঃ এখানে যে সকল লেখা আছে, তা কেবলই প্রকাশিত বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও বিভিন্ন মডিয়া থেকে নেওয়া। নিজস্ব কোন উৎসে থেকে নেওয়া নয়।